পরকীয়া প্রেম কি, অধিকাংশ বিবাহিত মহিলা বা পুরুষ যারা পরকীয়ায় পড়েন, তাদের শুরুটা কিন্তু এভাবেই হয়

পরকীয়া প্রেম,পরকীয়া প্রেম কাহিনী,স্বামীর পরকীয়া প্রেম,পরকীয়া,পরোকিয়া প্রেম,এবং পরকীয়া প্রেম থেকে ফিরে আসার,পরকীয়া প্রেমের টিপস,পরকীয়া প্রেম থেকে স্ত্রীকে ফেরানোর উপায়,পরকীয়া প্রেমের লক্ষণ,পরকীয়া,প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়া প্রেম


পরকীয়া প্রেম নাকি অভিশাপ

মাঝরাতে ঘুমিয়ে আছেন। হঠাৎ মোবাইল ফোনটি বেজে উঠল। কল রিসিভ করতেই শুনতে পেলেন ঐপাশে অচেনা পুরুষ কণ্ঠ। খুব অসহায় সেজে সে আপনাকে বলল, আমার স্ত্রীর সাথে সমস্যা। খুব কষ্টে আছি!

তখন আপনিও ভাবছেন, আহারে বেচারা! কত কষ্ট তার! প্রথমে সমবেদনা এবং ধীরে ধীরে দুজনের প্রতিদিনের আবেগঘন কথাবার্তা শেয়ারের মাধ্যমে একটি অনৈতিক সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়া।

অধিকাংশ বিবাহিত মহিলা বা পুরুষ যারা পরকীয়ায় পড়েন, তাদের শুরুটা কিন্তু এভাবেই হয়।

এদের অনেকেরই নিজেকে পারিবারিক জীবনে অসুখী দেখানোর প্রবণতা রয়েছে। নিজের স্বামীর বা নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে বলতে তাদের মনে কাজ করে না কোনো দ্বিধা।

এ ধরণের মানুষগুলো জানেন কীভাবে করুনা তৈরি করতে হয় আর কী পন্থায় এগুলে অপরপক্ষের মনে জায়গা করে নেয়া যায়। কান্না আর দুঃখের কিছু কথা।

পরিবারে তার নিঃসঙ্গতা, অধিকার বঞ্চনার কিছু কথা। ব্যস! এভাবেই ইমোশনাল এটাক। তারপর ইমোশনাল ডিপেনডেন্সি। এক পর্যায়ে সেই কথায় বিভ্রান্ত হয়ে, সহানুভূতি দেখাতে গিয়ে চোরাবালিতে আটকে যাওয়া।

একইভাবে স্বামী বিদেশে থাকা অবস্থায় স্ত্রীর অন্য পুরুষের সাথে সর্ম্পক তৈরি করা, একসাথে ঘুরে বেড়ানো অথবা বিয়ের পরে পুরনো সর্ম্পককে ভুলতে না পারা বা মানসিক দোটানায় ভোগা—এসব কিন্তু একজনকে অনৈতিক সর্ম্পকের দিকে ঠেলে দেয়।

আর পুরুষ এবং নারীর এই সর্ম্পকটি সহজে গড়তে প্রভাবিত করে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আগ্রাসন তথা মোবাইল ও ফেসবুকে বায়বীয় প্রেম এবং সিনেমা, নাটকে বাস্তবতাবর্জিত প্রেমকাহিনী।

আর ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষাকে উপেক্ষা করে এবং অবাধে মেলামেশার সুযোগ গ্রহণ করে এই মানুষগুলোও অবলীলায় দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে চান।

কিন্তু ভুলে যান যে দুই নৌকায় পা দিলে বা দুই দিকে মন ভাগ হয়ে গেলে জীবনে কখনো শান্তি আসে না।

আসলে যে নারী বা যে পুরুষ নিজের স্বামী বা স্ত্রী থাকা অবস্থায় আরেকজনের সাথে প্রেম করে। তারা নারী বা পুরুষ নামের অযোগ্য। তারা নারী বা পুরুষ নামের কলঙ্ক।

কারণ বিয়ের মাধ্যমে একসাথে সুন্দরভাবে থাকার স্বপ্ন নিয়ে একটি বন্ধনে আবদ্ধ হন দুই জন মানুষ এবং সেই সাথে তাদের দুই পরিবার। সেক্ষেত্রে পরকীয়া করার অর্থ নিঃসন্দেহে তার জীবনসঙ্গীটিকে প্রতারিত করা এবং পরিবারের ভবিষ্যতকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া।

ভারতে ডিএনএইন্ডিয়া ডট কম এ ‘40% Mumbai couples seeking extra-marital affairs’ নামে একটি প্রতিবেদন দেখানো হয় যে, ৪০% নর-নারী পরকীয়া প্রেমে আসক্ত।

যার মধ্যে ২৮% পুরুষ এবং ১২% নারী। ৫শ’জনকে নিয়ে করা একটি জরিপে থেকে এই ফল প্রকাশিত হয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বিবাহিতরা জীবনের কোনো এক পর্যায়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং এই সংখ্যা ৩০-৬০%। ট্রুথ এবাউট ডিসিপশন এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় এমনটি।

এজন্যে সেখানে বিবাহ বিচ্ছেদের হারও তুলনামূলকভাবে বেশি।

আসলে পরকীয়া সবসময় পরগাছার মতো। পরগাছা যেমন আসল গাছকে নষ্ট করে দেয়। যিনি পরকীয়ায় জড়াবেন তিনি তার আসল বৃক্ষকে নষ্ট করবেন।

বৃক্ষ নষ্ট হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারবেন তিনি কী হারিয়েছেন।

বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের জৈবিকতা বা প্রবৃত্তি কিন্তু সবসময় আমাদেরকে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট করে। স্রষ্টা আমাদের তৈরি করেছেন এভাবে।

এজন্যে সর্ম্পকে জড়ানোর আগে চিন্তা করতে হবে যে, সর্ম্পকটা কি বৈধ না অবৈধ। এই সর্ম্পকের সীমারেখা কোথায়? কারণ প্রত্যেকটা সর্ম্পকের একটা সীমা আছে।

মা-মেয়ের মধ্যে সম্পর্কের একটা সীমা আছে। বন্ধু বা বান্ধবীর সাথে সম্পর্কের একটা সীমা আছে। ভাই-ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্কের একটা সীমা আছে। এমনকি স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্কেও সীমা আছে।

যখন সীমানা বুঝতে পারবেন দেখবেন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আর যদি অবৈধ বুঝার পরেও চাপা দেয়ার চেষ্টা করেন, তবে আপনাকে জড়িয়ে পড়তে হবে আরো অবৈধ জিনিসের মধ্যে। প্রতিনিয়ত বসবাস করতে হবে মিথ্যার সাথে।

প্রত্যেক মানুষের মধ্যে ভালো মন্দ উভয় চিন্তাই বিদ্যমান। তবে এই মন্দ চিন্তা, প্রবৃত্তির প্ররোচনা থেকে সে মুক্ত হতে পারে।

যদি নিজের মধ্যে জাগ্রত করে নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় অনুশাসন এবং পারিবারিক মূল্যবোধকে। আপন মানুষগুলোকে আরো আপন করতে পারে যথাযথ সম্মান, ভালবাসা, বিশ্বস্ততা ও অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে।

তাই বিবাহিত হোন আর অবিবাহিত হোন—সর্ম্পকের ক্ষেত্রে সীমানা নির্ধারণ করুন। খেয়াল রাখুন অপরের প্রতি আপনার মমতার সীমা যেন প্লাবিত না হয়।

Sponsar
Share It